‘ওয়াকফ সম্পত্তি’ জবর দখল, নিরাপত্তাহীনতায় মোতাওয়াল্লী মাহবুবুর!

আপডেট: September 15, 2024 |
অভিযুক্ত আজাহার আলী মন্ডল

এম.এ.জলিল রানা, জয়পুরহাট: জয়পুরহাটে’ ওয়াকফ সম্পত্তি’ অবৈধ  দখলের পর মোতাওয়াল্লী মেরে ফেলার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।এবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মোঃ মাহবুবুর রহমান (মোতাওয়াল্লী) ।

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার পুরলগাড়ি এলাকায় এমন ঘটনা ঘটনা ঘটেছে।

মোতাওয়াল্লী অভিযোগ করেন,  সম্প্রতি ওয়াকফ সম্পত্তি জবর দখলকারী আজাহার আলী মন্ডল  তার সন্ত্রাসী চক্র ও ইন্ধন দাতা সবায় মিলে ষড়যন্ত্র করছে।,যদি যে কোন মূল্যে মিথ্যা মামলা ও মিথ্যা মামলায় নাম সংযোজনে তারা ব্যর্থ হয় তাহলে যে কোন উপায়ে মোতাওয়াল্লীকে মেরে ফেলা হবে। ফলে ভূক্তভোগীরা চরম নিরাপত্তাহিনতায় দিন পাড় করছেন। সে কারনে নিজেদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন, সুদৃষ্টির আশায়।

জানা গেছে, এর আগে  ফয়েজ উদ্দিন মন্ডল ওয়াকফের বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের কার্যালয় কর্তৃক ওয়াকফ আইনের ৫১ ধারা মোতাবেক স্থায়ীভাবে মোতাওয়াল্লী পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন  মোঃ মাহবুবুর রহমান । নিয়োগ প্রাপ্তির কিছু দিন পরেই আবুল কালাম মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির চেষ্টা করে। পরে অভিযোগের সত্যতা না থাকায় দুটি অভিযোগ পত্রই খারিজ ও নথিজাত হয়।

এরপর, আবুল কালামের চাচা আজাহার আলী মন্ডল হয়রানি ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার অসৎ উদ্দেশ্যে মোতাওয়াল্লীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রীট পিটিশন দায়ের করে।পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মোঃ মাহবুবুর রহমানকে মোতাওয়াল্লী পদে বহাল রেখে রায় আদেশ প্রদান করেন।

বাদী আজাহার আলী মন্ডল এর ইন্ধন দাতা এবং মোতাওয়াল্লীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের সহযোগিতায় জনৈক আজাহার আলী মন্ডল (মোতাওয়াল্লী)র বিরুদ্ধে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪র্থ আদালত জয়পুরহাটে পি ৭১/২০২২ ( ক্ষেত) নং মামলা দায়ের করে।মামলাটি সম্পূর্ণরূপে বে-আইনী মর্মে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।এতো কিছুর পরেও এই ষড়যন্ত্রকারীদের দৌরাত্ব থামেনি।কোর্ট প্রশাসনের ওই একই চক্রের সহায়তায় এবং ইন্ধন দাতার ইন্ধনে জনৈক আজাহার আলী মন্ডল আবারও শ্পেশাল জজ অর্থাৎ জেলা জজ আদালত জয়পুরহাটে মোতাওয়াল্লীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন।

ইতোমধ্যেই এই আজাহার আলী মন্ডল তার ইন্ধন দাতার ইন্ধনে ও দুষ্কৃতিকারী সঙ্ঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের সহায়তায় প্রায় ১০ বিঘা ওয়াকফ সম্পত্তি জবর দখল করে এবং ৩৫ শতাংশ ওয়াকফ সম্পত্তি বে-আইনী ভাবে হস্তান্তর করে।

মোতাওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধারের আইনগত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে,জেলা প্রশাসক জয়পুরহাট ওয়াকফ সম্পত্তির দখল নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে মোতাওয়াল্লীর বরাবরে ছেড়ে দেওয়ার জন্য জবর দখলকারীদেরকে আদেশ দেন।এতদসত্ত্বেও জবর দখলকারীরা ওয়াকফ সম্পত্তির দখল ছেড়ে দেননি। বরং মোতাওয়াল্লী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়েই চলেছে।

এছাড়া, ওয়াকফ সম্পত্তি জবর দখল করা থেকে বিরত থাকার জন্য জবর দখলকারীদেরকে অনুরোধ করা হলে,বাদী আজাহার আলী মন্ডল এর ইন্ধন দাতার ইন্ধনে সন্ত্রাসী ওই চক্রটি মোতাওয়াল্লীর বড় ভাই মোঃ ওমর শেখ মির্জা দুলুর (অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্য)কাছে চাঁদা দাবি করে হত্যা প্রচেষ্টায় ব্যার্থ হলে বিগত ৯/৭/২০১৫ ইং তারিখে জবর দখলকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষেতলাল থানায় পুলিশ বাদী একটি মামলা হয়।

যার নং-৮(৭)১৫ ,ধারা -১৪৩/৩২৩/ ৩৪১/৩৭৯/৫০৬/ ৩৮৫/১১৪/৩৪ দ: বি:।এ মামলায় আসামিরা জামিনে রয়েছে,মামলাটি জয়পুরহাট আদালতে বিচারাধীন।এছাড়া ওয়াকফ সম্পত্তি জোরপূর্বক জবর দখলকারী ইন্ধন দাতা ও সন্ত্রাসী চক্রের বিরুদ্ধে ক্ষেতলাল থানায় চাঁদাবাজি,ধর্ষণের ন্যায় একাধিক মামলা রয়েছে।

যার একটি মামলা নং – ১৩(৮)১৫,তারিখ:২৭/৮/২০১৫ ইং ,ধারা-৩৮৫/৫০৬(ii)/৩৪ দন্ড বিধি। সর্বশেষ গত ৫/৮/২০২৪ ইং তারিখে সাবেক সরকার পতনের পর ওই দিনই বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে সন্ত্রাসী চক্রের ৩ সদস্য (১)আজিজুল হক বাচ্চুর ছেলে রিপন(২)মৃত আব্দুস সালাম মন্ডল এর ছেলে খাজায়ে নূর মোহাম্মদ বাবু,(৩)মৃত আব্দুল জব্বার মন্ডল এর ছেলে আজিজুল হক বাচ্চু ,সর্ব সাং কোড়লগাড়ী,ক্ষেতলাল,জয়পুরহাট এর নেতৃত্বে এবং তাদের ইন্ধন দাতার ইন্ধনে ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মোতাওয়াল্লী ও তার বড় ভাই মোঃ ওমর শেখ মির্জা দুলু (অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্য)র বাড়িঘর প্রকাশ্য দিবালোকে ভাংচুর, লুটপাট ও ডাকাতি করে নিয়ে যায়।ওই সময়ে ক্ষেতলাল উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আবু সালেক ও তার সঙ্গীয় ফোর্স এবং ক্ষেতলাল থানায় কর্মরত সহকারী পুলিশ পরিদর্শক রাজু আহমেদ ও তার সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে গত ১৪/৮/২০২৪ ইং তারিখে ক্ষেতলাল থানায় এবং সেনা ক্যাম্প জয়পুরহাটে পৃথক দুটি এজাহার দাখিল করা হয়েছে।অপরাধী চক্রের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে দিশেহারা হয়ে নিজেদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য ক্ষেতলাল থানায় আইনগত প্রতিকার চাওয়ার কারণে ভূমি জবর দখলকারী সন্ত্রাসী চক্রের ইন্ধন দাতা মোতাওয়াল্লী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে যে কোন মূল্যে মিথ্যা মামলা ও মিথ্যা মামলায় নাম সংযোজনের ব্যাপক অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আজাহার আলী মন্ডলের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি ও ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ক্ষেতলাল থানার উপ-পরিদর্শক রাজু আহমেদ বলেন, মোতাওয়াল্লী মোঃ মাহবুবুর রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর