নিরাপত্তা আইনে যেসব সুবিধা পেতো শেখ পরিবার

আপডেট: September 10, 2024 |

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে।

সোমবার রহিতকরণ অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। কেবল একটি পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য আইনটি করা হয়েছিল। যা একটি সুস্পষ্ট বৈষম্য।

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ছিলেন হাসিনা সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার দায়িত্বে। আর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিজম বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা লন্ডনে থাকেন। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রায় সময়ই তিনি দেশে অবস্থান করতেন।

তার বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লন্ডনের একটি আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীও যুক্তরাজ্যে থাকেন।

আর শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক আওয়ামী লীগের সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) দায়িত্বে রয়েছেন। জানা গেছে, এখন তিনি ফিনল্যান্ডে অবস্থান করছেন।

এবার জেনে নেওয়া যাক, জাতির পিতা পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯ আলোকে শেখ পরিবারের সদস্যরা কি কি সুবিধা পেতেন এবং এই সুবিধা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রের কতো অর্থ ব্যয় হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা সরকারি খরচে তাঁদের সরকারি বা ব্যক্তিগত আবাসস্থলে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা, জ্বালানিসহ গাড়ি, টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও ইন্টারনেট সুবিধা পেতেন। এ ছাড়া তাঁরা সরকারি খরচে দেশ-বিদেশে চিকিৎসা সুবিধা ছাড়াও ব্যক্তিগত সহকারী ও পরিচারক পেয়ে আসছিলেন গত ১৫ বছর ধরে।

জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাঁদের আবাসস্থলে সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত, সরকারের বরাদ্দ করা বা নিজেদের মালিকানাধীন আবাসস্থলের প্রয়োজনীয় মেরামত, সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা নিতো।

এ পরিবারের সদস্যদের আবাসস্থলে ‘হুমকি ও অন্তর্ঘাতমূলক অবস্থা’ মোকাবিলায় সুরক্ষিত ও নিরাপদ বেষ্টনী প্রস্তুত রাখা ছাড়াও আবাসস্থলের চারদিকে নিরাপত্তাকর্মীদের অবস্থান নিশ্চিত করা হতো।

এ ছাড়া তাঁদের আবাসস্থলের আশপাশে সুউচ্চ ভবনে বসবাসকারীদের ওপর সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি রাখা হতো। আবাসস্থলে যাতায়াতের পথ সব ধরনের আক্রমণ থেকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থাও ছিল।

আবাসস্থলে সব সময় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রস্তুত রাখা এবং আবাসস্থলের ভেতরে যেসব স্থানে তাঁরা চলাফেরা করেন, সেসব স্থানে সব সময় ‘সুইপিং’ নিরাপত্তা রাখা হতো।

এসব আবাসস্থল সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা ছাড়াও ভেতরে-বাইরে নিরাপত্তা অ্যালার্ম বসানো, আবাসস্থলে প্রবেশের সময় সবাইকে মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে পরীক্ষা করার দায়িত্বে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।

এ ছাড়া আবাসস্থলে যেকোনো বস্তু, দ্রব্য বা সরঞ্জাম ঢোকানোর আগে স্ক্যান করতে হবে এবং আবাসস্থল থেকে তাৎক্ষণিক নির্গমনের জন্য এক বা একাধিক বিশেষ পথের ব্যবস্থা রাখা ছিল।

এসব সুবিধা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ ব্যয় করতে হতো।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর