হাসিনা সরকারের পতনের পর হামলা, ভাঙচুর থেকে বাইরে নয় সচিবালয়ের ফুড কর্ণার

আপডেট: September 2, 2024 |

দেশের বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের মত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বরাদ্ধ পাওয়া সচিবালয়ের অভ্যন্তরে স্থাপিত মাশরুম ফুড কর্ণার দখলের দাপট দেখা গেছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকদের।

সচিবালয়ের ৪ নম্বর ভবনের পেছনে ১৮/বি নং দোকান ২০১৬ সাল থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয় থেকে জায়গা বরাদ্দ নিয়ে ফুড কর্ণার বানিয়ে ব্যাবসা করে আসছেন মো. হাবিবুর রহমান।

শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করার পরের দিন ৬ আগস্ট সকালে কয়েকজন কর্মচারি এসে সেই দোকানে তালা দেয়। যদিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক দোকান খোলতে গিয়ে দেখেন নিজের লাগানো তালার উপর আরেকটি তালা দেয়া হয়েছে। দোকানে এসে তালা খুলতে গেলে কয়েকজন এসে বাধা দেওয়ার কথাও বলেছেন মো. হাবিবুর রহমান।

তিনি বলেন, “২০১৬ সালে সরকারি আবাস পরিদপ্তর হতে সচিবালয়ের অভ্যন্তরে কাঁচা মাশরুম এবং মাশরুমের তৈরি বিভিন্ন খাবার বিক্রির অনুমতি ও স্থান বরাদ্দ পাই এবং সর্বশেষ বিগত জানুয়ারি মাসের ৩০ তারিখে নবায়ন করিয়া বরাদ্দপত্রের শর্ত পালন করে কাঁচা মাশরুম এবং মাশরুমের তৈরি ফুড আইটেম বিক্রয় করে আসিতেছি।

“সরকার পরিবর্তন হলে বিগত ৬ আগস্ট দোকান খুলতে গিয়ে দেখি আমার বরাদ্দকৃত দোকানে আমার প্রদত্ত তালার উপরে কয়েকজন আরেকটি তালা লাগিয়ে রেখেছে। যাহার কারণে আমি দোকান খুলতে পারি নাই। আমার ব্যবসা বন্ধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে এইসব ব্যক্তিরা আমার নামে বরাদ্দকৃত দোকানটি তালা লাগিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “যেহেতু আমি নিয়মিত ভাবে ভাড়া প্রদান করে বিধি মোতাবেক সকল শর্ত পূরণ করে দোকানটি বরাদ্দ পেয়ে প্রতিবছর নবায়নের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। তাই জোরপূর্বক তালা লাগিয়ে আমার বৈধ ব্যবসা বন্ধ করা অবৈধ। আমার ধারণা এই কয়েকজন দখল করার জন্য এটা করেছে।

“আমি দোকান খুলতে গেলে তারা আমাকে হুমকি দিচ্ছে। তারা বলে এখানে দোকান করতে দিবে না। তারা এখানে ব্যবসা করবে। জোর করে তারা দোকান দখল নিতে চায়। আমি এই ব্যবসা দিয়ে সংসার চালাই। আমার ছেলে মেয়েদের পরাশোনা এই ব্যবসার আয়ের উপর নির্ভরশীল।”

সংসার চালাতে ফুড কর্ণারের বাইরে বারান্দায় বসে দোকান করতে দেখা যায় মালিক মো. হাবিবুর রহমানকে।

কর্মচারিরা তালা লাগানো কারণ জানতে চাইলে কর্মচারি কল্যাণ সমিতির সভাপতি সাদিকুর রহমান বলেন, “এই ফুড কর্ণারটি মূলত গণপূর্ত মন্ত্রনালয় আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয়কে বরাদ্ধ দিয়েছে। এখানে দোকান পরিচালনার জন্য মোহাম্মদ হাবিব নামে একজনকে দেয়া হয়েছে। এখন কৃষি মন্ত্রনালয় উনাকে রাখবেন, নাকি অন্য কাউকে বরাদ্দ দিবেন এই সম্পূর্ণ মন্ত্রনালয়ের বিষয়। এর জন্য একজন কর্মকর্তা দায়িত্বে আছেন। তারা ভালো বলতে পারবেন।”

এখনও পর্যন্ত মো. হাবিবুর রহমানের নামে দোকানের বরাদ্ধ থাকার পরেও কেন তালা দেওয়া হল জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের কয়েকজন কর্মচারিরা তালা লাগিয়েছে, সেটা আমি জানি। এখন কাকে দোকান দেয়া যায় সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, কথা বলতেছি। মন্ত্রনালয় এখনও এটা নিয়ে কোন চিঠি দেয় নি, হয় তো, দিবে।”

এ বিষয়ে জানার জন্য বুধ ও বৃহস্পতিবার কয়েকবার দপ্তরে গিয়ে পাওয়া যায় নি প্রকল্প পরিচালক আক্তার জাহান কাকনকে। পরে বেশ দু দিনই বেশকয়েকবার ফোন করেও পাওয়া যায় নি।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর