কমপ্লিট শাটডাউন : গণপরিবহন সংকটে দুর্ভোগ চরমে

আপডেট: July 18, 2024 |

কোটা সংস্কার আন্দোলকারীরা রাজধানীর শনির আখড়া ও কাজলা এলাকায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

বৃহস্পতিবার (১৮ জলাই) সকাল থেকে রাজধানীর রায়েরবাগ ও শনিরআখড়া এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট অবরোধ করে সাইনবোর্ড থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এলাকায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

ঢাকা থেকে বের হতে পারছে না কোনো পরিবহন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৮ কিলোমিটারের বেশি সড়কে হাজারো যানবাহন আটকে আছে। একই সঙ্গে ঢাকায় প্রবেশও করতে পারছে না গাড়িগুলো।

এমনকি রিকশা, মোটরসাইকেল, সাইকেলও যেতে দেয়া হচ্ছে না। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

বিশেষ করে সকাল সকাল অফিসগামীরা বেশি বিপদে পড়েছেন। এজন্য অনেকে গন্তব্যের উদ্দেশে হেঁটেই রওনা দিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত হাজারো যাত্রী হেঁটে যাচ্ছেন। আন্দোলকারীরা মহাসড়কের ছয়টি পয়েন্টে যানবাহন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখায় অন্যান্য যান চলাচল করতে পারছে না।

রায়েরবাগ এলাকায় অন্তত ৫০ জন আন্দোলনকারী রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রীবাহী রিকশাসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।

আটকা পড়া যানবাহনগুলোর মধ্যে অধিকাংশই ট্রাক ও বাস। পথচারীরা তাদের মোবাইলে ছবি ও ভিডিও করতে চাইলেও বাধা দিচ্ছেন আন্দোলকারীরা। তবে, মহাসড়কে চোখে পড়েনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ-বিজিবি-র‍্যাব ও সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আজ কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) পালন করবেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

এই কর্মসূচি চলাকালে শুধু হাসপাতাল, গণমাধ্যমসহ অন্যান্য জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত ও প্রাণহানির ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ মোট ৮ জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’।

প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীজুড়ে। মঙ্গলবার সেই আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে ৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর