ছাত্রছাত্রীরা না বুঝে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট: July 17, 2024 |

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ছাত্রছাত্রীরা না বুঝে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে সরকার কোটা বাতিল করে।

গত কয়েকটা পরীক্ষায় কোটা ছিল না। কোর্টে যাওয়ার অধিকার সবার আছে। যে কেউ যেতে পারে। তাদের একজন কোটা ফিরে পেতে হাইকোর্টে যায়।

তিনি বলেন, হাইকোর্ট সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে কোটা পুনর্বহালের। হাইকোর্ট রায় দিলো সরকারের বিরুদ্ধে, আবার আন্দোলনও সরকারের বিরুদ্ধে।

তবে হাইকোর্টের রায় সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী এখন কোটা নেই। এটা জানার পরও তারা আন্দোলন করছে দুরভিসন্ধিভাবে, ভুল বুঝিয়ে সম্পৃক্ত করছে।

আজ বুধবার (১৭ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফোরাম।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে রগ কেটেছে। রগ কাটা কাদের কাজ? শিবিরের। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে। দেখলাম ছাত্রদলের একজন মারা গেছে।

সেখানে তার কাজ কী? তার মানে কোটা আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত ঢুকেছে। গতকাল বিএনপি-জামায়াত চেয়েছিল কোটা আন্দোলনে লাশ তৈরি হোক। লাশ তৈরি করে তারা পানি ঘোলার চেষ্টা করছে। গতকাল কোটা আন্দোলনকারীরা কোনো কর্মসূচি দেয়নি।

রাত সাড়ে ১২টার দিকে গায়েবানা জানাজা, কফিন মিছিলের কর্মসূচি দেয়। এটা কোটা আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি না। বিএনপি-জামায়াতের পরামর্শে এ কর্মসূচি। তাদের সাথে যোগাযোগ করে তারা এ কর্মসূচি দিয়েছে।

তারা এখন বিএনপি-জামায়াতের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। মানুষের সেন্টিমেন্টক কাজে লাগিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে দেব না।

তিনি বলেন, গতকাল বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে, মেট্রোরেলে হামলা চালিয়েছে। এগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাজ না। বিএনপি-জামায়াত ঢুকে এসব কর্মকাণ্ড করেছে।

তারা এখন হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃতি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকারদের পক্ষে স্লোগান দিয়েছে। যারা এ স্লোগান দিয়েছে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে না।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি-জামায়াত কোটা আন্দোলনের কর্মসূচির ওপর ভর করে মাঠ অস্থিতিশীল করতে চাইছে। আমরা তা হতে দেব না।

তারেক রহমান নির্দেশ দিচ্ছে আন্দোলনে ঢুকে পড়তে। যারা কোটা নিয়ে আন্দোলন করছো সেই আন্দোলন আর তোমাদের হাতে নাই। ছিনতাই হয়ে গেছে।

তোমাদের নেতারা বিক্রি হয়ে গেছে। বিএনপি-জামায়াত লাশ চেয়েছিল পেয়েছে। তাদের ক্যাডাররা নেমে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে ৬ জনকে খুন করেছে। সরকার তদন্ত করছে। যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

ছাত্রছাত্রীদের প্রতি অনুরোধ চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করো। সরকার তোমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু তোমাদের আন্দোলন বিএনপি-জামায়াত ছিনতাই করেছে।

তোমরা সতর্ক থাকবে। তোমাদের নেতারা বিএনপির কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। বিএনপি-জামায়াতের প্রেসক্রিপশনের কাজ করছে।

সর্বোচ্চ আদালতে বিষয়টা বিচারাধীন। সরকার এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

তাদের তিনি বিএনপি-জামায়াতের হাতের পুতুলে পরিণত না হওয়ারও আহ্বান জানান।

হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৭ সালে ১৬ জুলাই বিনা ওয়ারেন্টে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শুধু তাকে না গণতন্ত্রের পায়ে শিকল পরানো হয়।

সামরিক জান্তা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। জনগণের আন্দোলনে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া মুক্তি পান। গণতন্ত্র মুক্তি পায়।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয় লাভ করে। ওয়ান ইলেভেনের সেই কুশীলবরা এখনো সক্রিয়। তারা দেশে গন্ডগোল পাকাতে চায়।

বিএনপি-জামায়াতের যেমন নিজেদের ক্ষমতা নেই তেমনি তাদেরও কোনো ক্ষমতা নেই। অন্যদের সঙ্গে মিশে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।

আওয়ামী লীগের শিল্প বাণিজ্য কমিটির সদস্য লায়ন মশিউর আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা, কৃষিবিদ আওলাদ হোসেন এমপি, অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর