জাবিতে রাতভর সংঘর্ষ, সাংবাদিক ও শিক্ষকসহ গুলিবিদ্ধ ৪
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রাতভর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পুরো ক্যাম্পাস।
এ সময় শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ চারজন গুলিবিদ্ধ ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন; ভাঙচুর করা হয়েছে উপাচার্যের বাসভবনও।
সোমবার (১৫ জুলাই) মধ্যরাত থেকে আজ (মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই) ভোর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, জাবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক খন্দকার লুৎফুল এলাহী, দৈনিক বাংলার জাবি প্রতিনিধি আব্দুর রহমান সারজিল ও বণিক বার্তার মেহেদী মামুন; বাকি একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা।
তারা আরও জানান, মধ্যরাতে হঠাৎ জাবি শাখা ছাত্রলীগ ও বহিরাগতরা সশস্ত্র অবস্থায় হেলমেট পরে ভিসি ভবনের সামনেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। এ সময় আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আশ্রয় নিলে সেখানে ঢুকেও শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়।
এক পর্যায়ে বিভিন্ন হল থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী বেরিয়ে এলে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়।
এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও ছররা গুলি ছোড়ে। এতে অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষকসহ চারজন। তাদের সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এনাম মেডিকেলের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার আলী বিন সোলাইমান বলেন, রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তত ৬০ জন আহত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই গুলিবিদ্ধ আছেন।’
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীরা যখন ভিসির বাসভবনের সামনে মুখোমুখি হয়, অপরদিক থেকে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনের সামনে উপস্থিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেন।
সে সময় আমাদের টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হামলায় আমি ছাড়াও পুলিশের অন্তত ১০-১৫ সদস্য আহত হন।
তবে আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। যে কোনো বিশৃঙ্খলা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।