বগুড়ায় শিশু তামিম হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার-১

আপডেট: July 13, 2024 |

শাহজাহান আলী, বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার স্কুলছাত্র তামিম(১৩)হত্যার সাথে জড়িত মূল হোতা এমমাদুল হক(২২) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

১২ জুলাই (শুক্রবার) ভোর রাত ৪ টার দিকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও শেরপুর থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমইন গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুকুর পাড় থেকে তামিম হত্যাকান্ডের সহিত সরাসরি জড়িত এমদাদুল হক(২২) কে গ্রেফতার করা হয়।

এসময় হত্যাকান্ডের ব্যবহৃত একটি চটের বস্তা, গরু বাঁধার রশি,একটি কালো রঙের স্যান্ডেল,একটি বেডসিট ও প্লাস্টিকের ড্রামকেটে বানানো নৌকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামী এমদাদুল হক বগুড়ার শেরপুর উপজেলার দক্ষিণ আমইন গ্রামের মোঃ খাদেমুল ইসলামের ছেলে। সে আব্দুল মান্নানের পুকুর ও গরুর খামার দেখা শোনার কাজ করতো।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন নবাগত পুলিশ সুপার জাকির হাসান এসব তথ্য জানান।

এর আগে ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমইন গ্রামের একটি জলাশয়ে ভাসমান অবস্থায় বস্তাবন্দি স্কুলছাত্র তামিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত তামিম একই গ্রামের মোঃ মুকুল আকন্দের ছেলে।সে স্হানীয় কেল্লা বাজারস্হ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র।

এ ঘটনায় নিহত তামিমের মা মোছাঃ সুফিয়া খাতুন শেরপুর থানার একটি নিখোঁজ জিডি করেন।

পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী এমদাদুল হক জানান,সে মান্নানের পুকুর ও গরুর খামার দেখাশোনার কাজ করতো।

গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে তামিম পুকুর পাড়ের ঘর থেকে মাছের কিছু খাবার নেয়।এসময় এমদাদুল তাকে দেখে ফেলেন এবং তামিমকে তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এমদাদুল তামিমকে মালিকের কাছে ধরিয়ে দিবে বলে ভয় দেখায়।

তামিল ভীত হয়ে আসামী এমদাদুলের প্রস্তাবে রাজী হয়। তখন আসামী তামিমকে পুকুর পাড়ের একটি ঘরে নিয়ে যায় এবং তার সাথে সংগমের ফলে তামিমের মলদার ফেটে যায়।

এসময় তামিম কান্নাকাটি ও চিৎকার শুরু করলে আসামী এমদাদুল হক দুই হাত দিয়ে তামিমের গলা চেপে ধরে। এর একপর্যায়ে তামিমের গলায় রশি প্রেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

পরে আসামী এমদাদুল হক ঘরে থাকা পাটের বস্তার মধ্যে তামিমের মরদেহ ভরে প্লাস্টিকের ড্রামের তৈরী নৌকায় তুলে পাশের পুকুরের মাঝখানে ফেলা দেয়।

পুলিশ সুপার আরো জানান,হত্যাকান্ডের সাথে আরো কেউ জরিত আছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে। আসামীকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (১০ জুলাই) সকালে স্কুলছাত্র তামিম বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর বাড়ি সে আর বাড়ি ফিরেনি।পরিবারের সদস্যরা সবজায়গা খোজাখুজি করেও তার কোনো সন্ধান সন্ধান না পাওয়ায় ওই দিন রাতেই ছেলে নিখোঁজ হয়েছে মর্মে পরিবারের পক্ষ থেকে শেরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

এদিকে নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘন্টা পরেই বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টার দিকে দক্ষিণ আমইন গ্রামস্হ আব্দুল হান্নান হাজীর মালিকানাধীন জলাশয়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় তামিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার,আব্দুর রশিদ,মোতাহার হোসেন সুমন রঞ্জন সরকার,জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মোস্তাফিজ হাসান,শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেমিল রেজা প্রমূখ।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর