নান্দাইলে চাঞ্চল্যকর ইদ্রিস আলী হত্যার প্রধান আসামি গ্রেফতার

আপডেট: June 30, 2024 |

কামরুল হাসান, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের নান্দাইলে জমিজমা সংক্রান্তে পূর্বশত্রুতার জেরে চাঞ্চল্যকর ইদ্রিস আলী (৫৫) হত্যার প্রধান আসামিকে যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১৪, ময়মনসিংহ ও র‍্যাব-১০।

বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অধিনায়ক র‍্যাব-১৪, ময়মনসিংহ মহোদয়ের নির্দেশক্রমে র‍্যাব-১৪, সিপিএসসি, ময়মনসিংহ এর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম, স্কোয়াড কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার মুহাঃ জাহিদ হাসান ও র‍্যাব-১০ এর সহকারী পুলিশ সুপার এমজে সোহেল এর নেতৃত্বে একটি যৌথাভিযানিক দল ২৮ জুন দুপুর অনুমান ১২ টা ৩০ মিনিটে ডিএমপি, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন রায়েরবাগ ফুটওভার ব্রীজের নিচে নারায়ণগঞ্জ টু যাত্রাবাড়ী রাস্তার উপর অভিযান পরিচালনা করে ইদ্রিস আলী হত্যার মূলহোতা এজাহারনামীয় ১নং পলাতক আসামি মো. সোহরাব উদ্দিন বাবলু (৫৫), পিতা-মৃত আ. রহিম, সাং-সিংরইল কোণাডাংগর, থানা-নান্দাইল, জেলা-ময়মনসিংহ‘কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ময়মনসিংহের নান্দাইল থানাধীন ৮নং সিংহরাইল ইউনিয়নের কোণাডাংগর গ্রামের বাদী ও আসামিরা পরস্পর বসবাস করে আসছিল।

জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ ছিল। বাদীর পিতা মফিজ উদ্দিন জমি-জমা সংক্রান্তে বিবাদীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়ের করার কারণে আসামিরা বাদীর পরিবারের লোকজনের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

ঘটনার দিন ২ জুন সকাল আনুমানিক ৯ টা ৩০ মিনিটে বিবাদীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হাতে রামদা, দা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাদীর বসতবাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে আক্রমণ চালায়।

১নং আসামী মো. সোহরাব উদ্দিন বাবলু অন্যান্য আসামীদেরকে হুকুম দিলে ০৭ নং আসামী রাজন মিয়া (২৭) খুন করার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে বাদীকে সজোরে আঘাত করে।

একপর্যায়ে, বাদী মো. বদিউল আলম বাদল (৪৫) দৌড়ে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পায়। ঐ সময় বাদীর বড় ভাই ও ভাইবৌ এগিয়ে আসলে বিবাদীরা বাদীর বড় ভাইকে এলোপাথাড়ি পেটায় এবং ভাইবৌকে শ্লীলতাহানি করে।

তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

একই দিনে সকাল অনুমান ১১টা ৩০ মিনিটে বাদীর অপর ভাই মো. ইদ্রিস আলী (৫৫) বাজার করে বাড়ীতে আসার সময় আসামীরা তার পথরোধ করে চর্তুদিক হতে ঘেরাও করে অতর্কিতভাবে হামলা শুরু করে।

একপর্যায়ে, ২নং আসামী সবুজ মিয়া তার কোমরে থাকা গামছা দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে টানাহেচড়া শুরু করে এবং ১ নং আসামী মো. সোহরাব উদ্দিন বাবলু হত্যার উদ্দেশ্যে বাদীর বড় ভাই ইদ্রিস আলীর অন্ডকোষ চেপে ধরে।

এছাড়াও অন্যান্য আসামীরা তাদের কাছে থাকা লোহার রড দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথাড়িভাবে মারপিঠ করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এমন কর্মকান্ড দেখে আশপাশের লোকজন আসলে আসামীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যায়।

ঘটনার পরপরই আশপাশের লোকজন মো. ইদ্রিস আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে দ্রুত কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এ ঘটনায় ময়মনসিংহের নান্দাইল থানা এলাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহতের ছোট ভাই মো. বদিউল আলম বাদল (৪৫), পিতাঃ মৃত মফিজ উদ্দিন, সাং- সিংরইল কোনাডাংগর, থানা- নান্দাইল, জেলা- ময়মনসিংহ বাদী হয়ে ১৪ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-১৭ তারিখ- ২২ জুন, ২০২৪ ধারা – ১৪৩/৩৪১/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩০২/৩৫৪/১১৪/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০।

মামলার পর থেকে আসামিরা গা ঢাকা দিয়ে পলাতক ছিলো। র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী উল্লিখিত ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

ধৃত আসামিকে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র‍্যাব জানায় এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে র‍্যাবের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর