খোকসায় রহস্যজনক ডাকাতি

আপডেট: May 26, 2024 |

আসাদুর রহমান, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি: গভীর রাতে গৃহকর্তা বাড়ি ঢোকার সাথে সাথে পাঁচ সদস্যের স্বসস্ত্র ডাকাত দল বাড়িতে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। তা পর জমির দলিল খুজতে শুরু করে।

বাড়ির সব তছনছ করে প্রায় ৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন ও নগদ ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।

ডাকাতদের নির্দেশেই ক্ষতিগ্রস্তরা সকাল পর্যন্ত চুপ ছিলেন।

শনিবার দিনগত রাতে খোকসা উপজেলা সদরের অদূরের কাদিরপুর গ্রামে মিজান আলীর বাড়িতে রহস্য ডাকাতির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পাঁচ সদস্যের ডাকাত দলের সবাই অস্ত্র ও গুলা-বারুদে সজ্জিত ছিল। তাদের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে পরিবারের সবাইকে একরুমে জিম্মি করে।

ডাকাতরা প্রায় ১ ঘন্টা ধরে বাড়ির প্রতিটি কক্ষে তল্লাসী চালায়। পৃথক পৃথক কক্ষ থেকে পরিবারের সদস্যদের প্রায় ৯ ভরি সোনার গহনা, নগদ ২ লাখ ২০ হাজার টাকা, সিমসহ ৩টি মোবাইল ফোন, একজোড়া নতুন দামি স্যান্ডেল এবং জমির কয়েকটি দলিল নিয়ে বাড়ির পশ্চিম দিকের মাঠ দিয়ে পালিয়ে যায়।

রবিবার সকাল ৭টার দিকে পরিবারের লোকেরা পুলিশকে খবর দেয়।

রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির বাইরে পুলিশ সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরী নিয়ে ব্যস্ত। ক্ষতিগ্রস্তদের আত্মীয় স্বজন ডাকাতির খবর শুনে ভিড় জমাতে শুরু করেছে।

বিভিন্ন ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করা হয়েছে। তবে ডাকাতরা পরিবারের সদস্যদের সাথে তেমন খারাপ আচরণ বা মারপিট করেনি বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।

ঘটনা স্থলে উপস্থিত থানা পুলিশের এক এসআই জানান, ডাকাতির ঘটনাটি নিয়ে যথেষ্ট রহস্য রয়েছে। অধিকতর তদন্ত করলে সত্য ঘটনা উঠে আসবে।

গৃহকর্তা মিজান আলী জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে এই বাড়িতে বসবাস করছেন। কখনো দুবৃত্তে¡র হামলা হয়নি। শনিবার দিনগত রাত ১২টার দিকে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করেন। এ সময় পাঁচজন অস্ত্রধারী তার পিছু নেয়।

বাড়ির ভিতর প্রবেশের পর তাকে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের অস্ত্রের মুখে এক ঘরে জিম্মি করে। ডাকাতরা জমির দলিল চায়। এক পর্যায়ে ঘরে ঘরে তল্লাসী শুরু করে।

সোনার গহনাসহ প্রায় ১০-১২ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। একই সাথে ডাকাতির বিষয়ে কাউকে না বলার জন্য নিষেধ করে যায়।

এ কারনে তারা সকাল পর্যন্ত চুপ ছিলেন। তিনি ও তার পরিবারের সদ্যদের দাবি, খরিদ কৃত কিছু জমির রেজিস্ট্রি নিয়ে একই এলাকার রশিদ নামের এক ব্যক্তির সাথে বিরোধ চলছে। সে জমির বায়না নামা ফেরত নিতে ডাকাতির ঘটনা ঘটাতে পারে। তিনি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রশিদের সাথে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে যাওয়া হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। বিক্রি করা জমির মালিক রশিদের স্ত্রী রওশনারা ও তার ছেলে মেহেদি এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তারা নিজেদের দরিদ্র বলে দাবি করেন।

ছেলের চাকুরির প্রয়োজনে তিন বছর আগে ওই জমি বিক্রি করেন। বায়নাও করে দেন। কিন্তু মিজান টাকাও দেয়নি, জমিও রেজিস্ট্রি করে নেয়নি। এখন জমি রেজিস্ট্র করে নেওয়ার জন্য ডাকাতির নাটক সাজাচ্ছেন।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আননুর যায়েদ বলেন, ঘটনাটি রহস্য জনক। জায়গা জমির বিরোধ আছে। তদন্ত হলে অন্ধকারে থাকা সব ঘটনা আলোয় বেড়িয়ে আসবে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর