ঈদে স্বস্তির লঞ্চযাত্রা, নেই অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ

আপডেট: April 20, 2023 |

ঈদের সরকারি ছুটির শুরুর দিন রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রী সংকটে ভোগা দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চগুলোতে অবশেষে যাত্রীচাপ বাড়ছে। যাত্রীবোঝাই করে দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চগুলো ঘাট ছেড়ে গেছে। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে অনেকটা স্বস্তি নিয়েই ঘরমুখো মানুষ গ্রামে যাচ্ছেন।

নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা দক্ষিণের জেলাগুলোর মানুষকে পৌঁছে দিতে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লঞ্চগুলো ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। অথচ কিছু দিন আগেও যাত্রীর অভাবে নির্দিষ্ট সময়ে লঞ্চ ছাড়ত না। সেখানে এখন লঞ্চগুলো পূর্ণ যাত্রী নিয়ে ঘাট ছাড়ছে।

ঈদের ছুটির প্রথম দিনে নিয়মিতভাবে চলাচলকারী লঞ্চগুলোর পাশাপাশি স্পেশাল ট্রিপ দেয়া নৌযানগুলোও পূর্ণ যাত্রী নিয়ে নির্ধারিত গন্তব্যের উদ্দেশে ঘাট ছেড়ে গেছে। খালি নেই লঞ্চগুলোর কেবিন। ডেকেও দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। এছাড়া বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, হাতিয়া, পটুয়াখালীগামী যাত্রীদের অনেকেই ঈদের আগের দিনের কেবিন বুকিং দিতে এসেছেন। আবার লঞ্চের ডেকে জায়গা করে নিতেও অনেকে আগেভাগে ঘাটে চলে এসেছেন। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বুধবার বিকেল ঘনিয়ে সন্ধ্যা নামার মুহূর্তে যাত্রী চাপ বাড়তে থাকতে থাকে। যাত্রীদের বেশিরভাগই বরিশালগামী লঞ্চে ভিড় করছেন। এছাড়াও পটুয়াখালীর বগা, ইলিশা এসব রুটেও যাত্রী আসতে শুরু করেছে। এদিকে যাত্রী চাপ আর লঞ্চে ভিড় যেন সময় গড়ানোর সাথে সাথে বেড়েই চলছে।

সদরঘাটের একাধিক লঞ্চের সুপারভাইজার আর টিকিট কাউন্টার থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, লঞ্চগুলোতে ডেকের যাত্রী সংখ্যাই বেশি। নিম্ন ও মধ্য আয়ের পরিবারগুলোই লঞ্চে যাচ্ছে। সড়কের চেয়ে তুলনামূলক ভাড়া কম ও যাত্রাপথ আরামদায়ক হওয়াতেই যাত্রী চাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তারা। এদিকে টিকিট বিক্রির চাপে লঞ্চ সংশ্লিষ্ট কেউ কথা বলারই সময় পাচ্ছেন না।

ভোলাগামী যাত্রী সবুজ বলেন, আমি লঞ্চের নিয়মিত যাত্রী। ঈদ উপলক্ষে অফিস ছুটি হওয়ায় বাড়ি যাচ্ছি। পরিচিত হওয়ায় কেবিন বুকিং করতে কোনো সমস্যা হয়নি। আশা করছি স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যেতে পারব।

বরিশাল রুটে স্পেশাল সার্ভিস দেয়া লঞ্চ মানামীতেও দেখা গেছে যাত্রীদের ভীড়। এ লঞ্চের সুপারভাইজার বাদল মিয়া বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে আজই আমাদের প্রথম যাত্রা। সরকারি অফিস ছুটি হওয়ায় যাত্রী চাপ বেড়েছে।

অ্যাডভেঞ্চার-৫ লঞ্চের চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এবারের ঈদে আজকেই সবচেয়ে বেশি যাত্রী হয়েছে। তবে গত ঈদের মতো যাত্রী এখনও দেখছি না। আশা করছি ভালোভাবে বরিশাল পৌঁছাতে পারব।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘বরিশাল রুটে এতদিন দুইটি করে লঞ্চ চলত, আজ চলবে ৮টি লঞ্চ। পটুয়াখালী রুটে চলাচল করত একটি লঞ্চ, এ রুটেও আজ চলবে ৮টি লঞ্চ। ভোলা, ইলিশা রুটে যাত্রী আসছে। সন্ধ্যার পর থেকে যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের বড় লঞ্চগুলোর ধারণক্ষমতা ১২০০ তবে সেখানে ৩০০০ হলেও সমস্যা হবে না। যাত্রী চাপ সামলাতে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে লঞ্চও প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঈদ যাত্রায় এবার কোনো ভাড়া বাড়ানো হবে না। আর যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী বিশেষ লঞ্চ চলবে। এসব লঞ্চের কেবিন বুকিং ও ডেকের টিকিট ঘাটে এসেই নিতে পারবেন।

সার্বিক বিষয়ে নৌপুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম বলেন, যাত্রীদের ঈদযাত্রা সুন্দর ও সহজ করতে আমরা সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আমরা সর্বদা যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকব। ঈদের সময়ে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা মাথায় নিয়ে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। যাত্রীরা যেন এবারের ঈদ যাত্রা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করতে পারেন সেই প্রত্যাশায় নৌ পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর