মেসির বাসার সামনে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা, মেটালেন ভক্তের আবদার

আপডেট: April 11, 2023 |

হুয়ান পোলকান পিএসজি তারকা মেসির ভক্ত। মেসি সাথে দেখা করতে তার বাসাল সামনে ১০ ঘন্টা বসে ছিলেন হুয়ান। একপর্যায়ে মেসি দরজা খুলে পোলকানকে বাসার ভেতরে নিয়ে যান। মেসির দেয়া অটোগ্রাফ শরীরে ট্যাটুও করিয়েছেন হুয়ান।

যুক্তরাস্ট্রের অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ইনফোবে’ জানিয়েছে এই খবর। পোলকান নিজেও এ নিয়ে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। মেসির অটোগ্রাফ দেয়ার ভিডিও ও ছবি পোস্ট করেছেন ইনস্টাগ্রামে। টিকটকে প্রকাশ করেছেন ভিডিও। হুয়ান প্যারিসে গিয়ে মেসির বাড়ির দরজার সামনে ১০ ঘণ্টা বসেছিলেন। ভেবেছিলেন, অলৌকিক কিছু ঘটে গেলে মেসির সঙ্গে তার দেখাও হতে পারে!

ইনফোবে জানিয়েছে, কয়েক মাস মেসির সঙ্গে দেখা করার এই পরিকল্পনা করেন হুয়ান। সে জন্য প্রয়োজনে প্যারিসে গিয়ে দুই দিন থাকতেও রাজি ছিলেন তিনি। ইনফোবেকে হুয়ান এ নিয়ে বলেছেন, ‘যাওয়ার আগে সবকিছু ঠিকঠাকমতোই হয়েছে। মেসির বাসার ঠিকানাটা ইন্টারনেটে অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। শেষ পর্যন্ত একজন হেয়ারড্রেসারের কাছে ঠিকানাটা পেয়েছি, সে আমাকে ঠিকমতো জায়গাটা দেখায়নি। তবে বাসাটা কোথায় তা বুঝিয়ে দিয়েছে। যখন তার বাসার সামনে পৌঁছাই তখন সকাল ৮টা। বাসাটা খুঁজে পেতে ৪৫ মিনিটের বেশি লাগেনি।

মেসির বাসার সামনে অপেক্ষা করা নিয়েও কথা বলেছেন হুয়ান, যে হোস্টেলে ছিলাম সকালে সেখানে শুধু একটা কফি খেয়েছিলাম, এরপর রাতে ফেরার আগপর্যন্ত সারা দিনে কিছু খাইনি। লোকজন আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জার্সি দেখে ভেবেছে, মেসির সঙ্গে হয়তো কোনো সংযোগ আছে! সকাল ৯টা পর্যন্ত বসে থাকার পর তাকে অনুশীলনে যেতে দেখি। শুরুতে সে একা ছিল, দুপুরের দিকে একটি ছেলে এসে তাঁর সঙ্গে যোগ দেয় এবং দুর্দান্ত একটি চিত্রকর্মও এনে দেয়।’

অপেক্ষার প্রথম কয়েক ঘণ্টা খুব দীর্ঘ মনে হয়েছে হুয়ানের। ‘দুপুরের দিকে সে ফিরে আসার পর ধারেকাছেও ঘেষতে পারিনি। কিন্তু নিশ্চিত ছিলাম সে আমাকে দেখেছে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আন্তোনেল্লা (মেসির স্ত্রী) বাসা থেকে বের হন। গাড়ির জানালা খুলে তিনি আমাদের সঙ্গে খুব ভালোভাবে কথা বলেছেন এবং জানান যে সন্তানদের আনতে যাচ্ছেন। তিন ঘণ্টা পর তিনি ফিরে আসেন তবে আমাকে আর পাত্তা দেননি।’

হুয়ান এই অপেক্ষার মধ্যেই হতাশ হয়েছেন। মাঝেমধ্যে তার মনে হয়েছে, মেসির দেখা হয়তো পাওয়া যাবে না, ‘একপর্যায়ে মনে হয়েছে কোনো সুযোগ নেই। কারণ মেসি পাত্তা দিচ্ছিল না। নিরাপত্তাপ্রহরী এসে বলেছে সে পুলিশে জানাবে। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। কারণ মেসির সঙ্গে দেখা করতে প্যারিসে দুই দিন থাকার পরিকল্পনা ছিল।’

হুয়ানের ধৈর্য দেখে শেষ পর্যন্ত লিওনেল মেসিআন্তোনেল্লা রোকুজ্জো দম্পত্তির ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে। শুনুন পোলকানের মুখেই, ‘হঠাৎ আন্তোনেল্লা কোত্থেকে যেন উদয় হয়ে দরজা দেখিয়ে আমাকে আসতে বলল। দৃশ্যটা কখনো ভুলব না। সে আমার জন্য বাসার দরজা খুলেছে! অন্য কোথাও দেখা করতে পারত, কিন্তু তা না করে নিজের বাসায় ডেকেছে।’

মেসির বাসায় ঢোকার পরের ঘটনাটা হুয়ান জানিয়েছেন এভাবে, ‘বাসায় ঢোকার পর প্রথমে চোখে পড়েছে যে দৃশ্যটি, মেসি শর্টস ও স্যান্ডাল পরে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে হ্যালোও বলেছে। অবিশ্বাস্য মুহূর্ত। তাকে বলেছি কতটা ভালোবাসি। একসঙ্গে ছবি তুলেছি। আমার ফুটসাল ক্লাবের জার্সিতে তিনি অটোগ্রাফও দিয়েছেন। আমাকে বুকে টেনে নিয়েছেন এবং হাতের বাহুতে অটোগ্রাফও দিয়েছেন। তখন আমার হাত কাঁপছিল, এমন আগে কখনো অনুভব হয়নি। অটোগ্রাফটি হাতে ঠিকমতো দিতে মেসিই আমাকে শান্ত করেন।’

হুয়ান মেসির বাসা থেকে বের হয়ে ‘আর্ক দে ত্রিয়োম্ফ’ এর পথ ধরেন। ততক্ষণে তার মাথার মধ্যে ঝড় বইছে। মেসির দেয়া অটোগ্রাফ শরীরে চিরকালীন করে রাখতে হবে! অর্থাৎ অটোগ্রাফটি ট্যাটু করানোর সিদ্ধান্ত নেন হুয়ান, ট্যাটু করাতে আর্ক দে ত্রিয়েম্ফের পথে যাচ্ছিলাম। পথে একজন ট্যাটুশিল্পীকে পেয়েও যাই। তিনি রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে আমাকে ট্যাটু করিয়ে দেন।’

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর