বাবা সিদ্দিকির খুনিরা বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য, সালমান খানের বাড়িতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি

আপডেট: October 13, 2024 |
boishakhinews 52
print news

প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুতে স্তব্ধ বলিউড। আক্রান্ত হওয়ার কিছু ক্ষণ আগেও দশেরার শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। তার পরেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান তিনি। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, এই খুনের পিছনেও রয়েছে লরেন্স বিষ্ণোই দলের হাত। এই বিষ্ণোইদের নিশানায় বার বার এসেছেন সলমন খানও। খবর পেয়েই শুটিং ছেড়ে বাবা সিদ্দিকিকে শেষ দেখা দেখতে তড়িঘড়ি লীলাবতী হাসপাতালে পৌঁছন ভাইজান।বাবা সিদ্দিকির সঙ্গে সুসম্পর্ক সলমনের। তাঁর জন্যই শাহরুখের সঙ্গে ফের মিটমাট হয়েছিল সলমনের। বি-টাউনে প্রায়ই কাণ্ডারীর ভূমিকা পালন করে এসেছেন বাবা সিদ্দিকি।সেটা ২০১৩ সাল। শাহরুখ ও সলমনের মধ্যে তখন প্রায় ঠান্ডা যুদ্ধ চলছে। সলমনের প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যাটরিনা কইফের জন্মদিনের পার্টিতে তর্কে জড়ান বলিউডের দুই খান। তার পরেই সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়। এর পরে বলিউডও প্রায় দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এক দিকে শাহরুখের অনুগামীরা। অন্য দিকে সলমনের। অগত্যা হস্তক্ষেপ করতে হয় বাবা সিদ্দিকিকে। রাজনীতির দুনিয়ার মানুষ হলেই বলিউডের সঙ্গে তাঁর সখ্য বার বার ধরা পড়েছে।
বাবা সিদ্দিকির উদ্যোগেই ফের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সলমন ও শাহরুখের। ২০১৩-র সেই পার্টিতে দুই খানের বন্ধুত্বে জোড়া লাগান বাবা সিদ্দিকি। একসঙ্গে কাজ করাও শুরু করেন দু’জনে।
প্রতি বছর ইফতারে পার্টির আয়োজন করতেন বাবা সিদ্দিকি। বলিউডের চাঁদের হাট বসত সেই পার্টিতে।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতেই কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ত্যাগ করেন সিদ্দিকি। যোগ দেন অজিত পাওয়ারের শিবিরে। তবে তার আগে প্রায় পাঁচ দশক কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলেন সিদ্দিকি। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম কর্নেইল সিংহ এবং ধরমরাজ কাশ্যপ। এক জন উত্তরপ্রদেশ এবং এক জন হরিয়ানার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে দু’জনই স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁরা বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য।
বিষ্ণোই গ্যাংয়ের এক সদস্যের পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পর সলমনের বাড়ির নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘সলমন খান, আমরা এই লড়াই চাইনি। কিন্তু আপনার জন্য আমাদের ভাই প্রাণ হারিয়েছে। বাবা সিদ্দিকি এক সময় দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে কাজ করেছেন। এখন ভদ্র সেজেছিলেন। দাউদ এবং অনুজ থাপানের সঙ্গে ওঁর সম্পর্কই ওঁর মৃত্যুর কারণ। কারও সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতা নেই। কিন্তু সলমন খান বা দাউদের গ্যাংকে যাঁরা সাহায্য করেন, তাঁরা সাবধান! আমাদের কোনও ভাইয়ের গায়ে কেউ হাত দিলে, আমরা শাস্তি দেব। আমরা প্রথমে মারি না। প্রতিশোধ নিই।’’
৬৬ বছরের বর্ষীয়ান নেতাকে শনিবার দশেরার অনুষ্ঠান চলাকালীন গুলি করে খুন করা হয়। তিন জন দুষ্কৃতী গুলি চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। হরিয়ানার গুরমেল সিংহ এবং উত্তরপ্রদেশের ধরমরাজ কাশ্যপের সঙ্গে তৃতীয় জনকেও চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তাঁর নাম শিব কুমার। তিনিও উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বলেই জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁর খোঁজ চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই তিন জন ছাড়াও আরও এক জন এই চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত। যিনি নেপথ্যে থেকে পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁকেও খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে সিদ্দিকিকে খুন করার অনুশীলন করছিলেন ওই তিন জন। বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন তাঁরা। আগেই তাঁদের ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে দেওয়া হয়েছিল এই কাজের জন্য। বাকি অর্থ পরে দেওয়ার চুক্তি ছিল। তিন জনই মূলত ভাড়াটে খুনি, জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
কুখ্যাত গ্যাংস্টার বিষ্ণোই এখন জেল খাটছেন। কিন্তু তাঁর গ্যাং সক্রিয় বাণিজ্যনগরীতে। কিছু দিন আগে সলমনের বাড়ির সামনে গুলি চলেছিল। সেই ঘটনাতেও বিষ্ণোই গ্যাংয়ের জড়িত থাকার কথা জানিয়েছিল পুলিশ। সলমনের বাবা সেলিম খানকেও হুমকি দেওয়া হয় কিছু দিন আগে। সলমনের সঙ্গে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের বিবাদ অনেক দিনের। সিদ্দিকি খুনের সঙ্গে সেই বিবাদের সম্পর্ক রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

সূত্র – আনন্দবাজার

 

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর