শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও সংকট কাটেনি: মির্জা ফখরুল

আপডেট: September 27, 2024 |

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও এখনো সংকট কাটেনি।

দ্রæত প্রশাসনের সব ইউনিটকে সংস্কার করে দেশকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের উপযোগী করতে হবে। তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নির্বাচনের নিরপেক্ষ পরিবেশ তৈরির আহŸান জানান।

তিনি সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক পাটমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ.স.ম হান্নান শাহ’র ৮ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে ‘হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদ’ আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, হান্নান শাহ্র চলাফেরা ছিল সেনা কর্মকর্তার মত, কিন্তু তিনি আপদমস্তকে একজন গণতন্ত্রমনা নেতা ছিলেন।

তিনি গণতন্ত্রের পক্ষে সব সময় কথা বলেছেন। আজীবন তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আজিজুল রহমান পেরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় আরো বক্তব্য দেন, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, নজরুল ইসলাম আজাদ, সহস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা শেফাউল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মুজিবুর রহমান, ওমর ফারুক সাফিন, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মো. শওকত হোসেন সরকার, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মরহুম আ স ম হান্নান শাহ্র ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রমুখ।

এর আগে বিকেল ৩টায় ক্বারী আব্দুস সাত্তারের কুরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাপাসিয়ার জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, বিগত দিনে আপনারা যেভাবে হান্নান শাহর পাশে ছিলেন আগামীতেও তার সুযোগ্য পুত্র রিয়াজুল হান্নানের পাশে থাকার আহŸান জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানের আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ঘাগটিয়ায় হান্নান শাহ্র কবর জিয়ারত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ফজলুল হক মিলন বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আজকের এই পরিবেশের জন্য বহু প্রাণ দিতে হয়েছে।

বহু ত্যাগের বিনিময়ে যে ফসল অর্জিত হয়েছে তা যেনো কোন ষড়যন্ত্রকারী ধ্বংস করতে না পারে সেজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বলেন, বহু সম্পদ ও প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত ফসল আপনাদের কাছে আমানত রাখা হয়েছে। এই আমানতের যাতে খেয়ানত না হয় সেজন্য আপনাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা আমরা আশা করি।

ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু বলেন, বিএনপি ক্ষমতার রাজনীতি করে না, মানুষের অধিকার আদায়ের রাজনীতি করে।

মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে বলেই বিএনপির ওপর এতো জেল-জুলুম-নির্যাতন। জনগণকে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, আওয়ামী লীগ যে অপকর্ম করেছে বিএনপি তা করবে না।

এদিকে এটি একটি স্মরণসভা হলেও জুমার পর পরই কাপাসিয়া পাইলট স্কুল মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এতে কাপাসিয়া উপজেলা ছাড়াও পাশের শ্রীপুর ও কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ১/১১ এর প্রথম প্রতিবাদকারী হান্নান শাহ ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর একটি গায়েবি মামলায় হাজিরা দিতে ঢাকার ডিওএইচএসের বাসা থেকে বের হওয়ার সময় হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হলে প্রথমে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।

পরে অবস্থার অবনতিতে চিকিৎসকদের পরামর্শে মুমূর্ষু অবস্থায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া হয়।

ওই বছর ২৭ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিঙ্গাপুরের র‌্যাফেলস হার্ট সেন্টারে ৭৪ বছর বয়সে মারা যান মান্নান শাহ।

দেশে-বিদেশে সাত দফা জানাযা শেষে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামে বাবা-মায়ের করবের পাশে সমাহিত করা হয় তাকে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর