তোফাজ্জলের মা সেটা দেখতে পেলে কি করতেন : আশফাক নিপুন

আপডেট: September 20, 2024 |

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হলে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে দেশজুড়ে। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত ও বিচারের দাবিতে সোচ্চার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ।তোফাজ্জল হোসেনকে মারধরের ঘটনার ভিডিও দেখে যে কেউ কেঁপে উঠবেন। বিষয়টি ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে ‘মহানগর’খ্যাত নির্মাতা আশফাক নিপুনকেও। এ নিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে কিছু প্রশ্ন, কিছু অনুভূতির ব্যাখ্যা করেছেন এই পরিচালক। আশফাক নিপুন লেখার শুরুতে বলেন, ‘আমি শুধু তাদের মায়েদের কথা ভাবি। এই যে তোফাজ্জল নামের এক মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ যুবককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র পিটিয়ে মেরে ফেলল, আমি ভাবি তোফাজ্জলের মা সেটা দেখতে পেলে কি করতেন? জানলাম, উনি মারা গেছেন আগেই। কিন্তু এমনো তো হতে পারে তোফাজ্জলের কাছ থেকে ৩ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন উনি, ছেলেকে বাঁচাতে পারছিলেন না দেখে চুড়ান্ত অসহায় বোধ করছিলেন! হয়তো ছেলেকে ভাত খেতে দেখে আশান্বিত হচ্ছিলেন যে, ছেলের কিছু হবে না আর, এই যাত্রায় বেঁচে যাবে! হয়তো এরপরও নির্যাতনের মাত্রা দেখে আল্লাহর কাছেই ফরিয়াদ করছিলেন ছেলেটার যেন মৃত্যু হয়, ছেলেটা যেন আর কষ্টের ভেতর দিয়ে না যায়!’বুয়েটের আবরার ফাহাদ, বিশ্বজিৎ, রাজশাহীতে নিহত ছাত্রলীগকর্মীর মায়ের অনুভূতির কথা জানতে চেয়ে আশফাক নিপুন বলেন, ‘আবরার ফাহাদের মায়ের কথাও ভাবি। আবরারকে যখন স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো হচ্ছিল, তখন তার মা পাশে থাকলে কি কষ্টটা পেতেন! বিশ্বজিতের মায়ের কথা ভাবি, ছেলেকে কোপাকুপি করার সময় সামনে থাকলে কি করতে পারতেন তিনি ছেলেকে বাঁচাতে? রাজশাহীতে নিহত ছাত্রলীগকর্মী পঙ্গু মাসুদের কথা ভাবি, যখন সে পানি চেয়েও পানি পাচ্ছিল না, তখন তার মা সেখানে থাকলে কি ছেলের জন্য পানি আনতে ছুটাছুটি করতেন? নাকি সরে গেলে ছেলেকে মেরে ফেলবে এই ভয়ে পানিও আনতে যেতেন না? বা গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দিদারের মৃত্যু? সেই সময় যদি তার মা আশেপাশে থাকতেন তাহলে কি ছেলেকে বাঁচাতে পারতেন?’যে মা সন্তান হারান, তার নিদারুণ কষ্টের অনুভূতি অনুভবের চেষ্টা করে দিশেহারা আশফাক নিপুন। তার ভাষায়, ‘আমি শুধু সেইসব মায়েদের কথা ভাবি, যারা ৯ মাস গর্ভে ধারণ করা থেকে সন্তান জন্ম দিয়ে তার পুরোটা জীবন সেই সন্তানকে লালনপালন করে, বড় করে একদিন জানতে পারেন তার ছেলেকে বা মেয়েকে কেউ মেরে ফেলেছে। কি যায় তাদের ভেতর দিয়ে সেটা ভাবি। তল পাই না। অন্ধকার লাগে সব।’
নিজের মায়ের প্রসঙ্গ টেনে আশফাক নিপুন বলেন, ‘আমি আমার মায়ের কথা ভাবি। ভাবি, আমাকেও যদি কেউ এভাবে দলবেধে মেরে ফেলে তাহলে আমার মায়ের কেমন লাগবে? কেমন অসহায় বোধ করবে সে? আপনারাও ভাবেন কি?

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর