সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: নেত্রকোনার সড়কের পাশে থাকা তিনটি রেইনট্রি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে জেলা বিএনপি সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালীর বিরুদ্ধে।
সোমবার সকালে কেন্দুয়া পৌরসভার কেন্দুয়া-মদন সড়কের পাশে বাদে আঠারবাড়ি এলাকায় বিএনপি নেতা হিলালীর বাড়ির সামনে থাকা ওই তিনটি সরকারি গাছ অবৈধভাবে কেটে নেওয়া হয়েছে। এদিন বিকালে একটি গাছ কাটার ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়।
পট পরিবর্তনে প্রভাব বিস্তার করে বিএনপি নেতা ওই গাছগুলো কেটে ফেলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
তবে ইউএনও’র দাবি, জরুরি প্রয়োজনে নির্বাহী ক্ষমতা বলে তিনি যেকোন সময় যেকোন সরকারি গাছ কাটতে পারেন। পরে সেগুলো টেন্ডার নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা যায়।
ওই তিনটি গাছের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি দেওয়া হয়েছে, জবাব পেলে কাটা গাছগুলো নিলামের ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান তিনি।
গাছ কাটার ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিএনপি নেতা রফিক ইসলাম হিলালীর বাসার সামনে সড়কে থাকা বড় বড় তিনটি রেইনট্রি গাছ কাটা হচ্ছে এবং কাটা গাছের অংশবিশেষ স্থানীয় লোকজন নিয়ে যাচ্ছেন।
এসময় স্থানীয় লোকজন গাছ কাটার ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে গেলে বাঁধা দেন বিএনপি নেতা রফিক ইসলাম হিলালীর লোকজন।
মঙ্গলবার সরেজমিন গেলে দেখা যায়, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম হিলালীর বাসার সামনে থাকা রেইট্রি গাছগুলো নেই।
গাছগুলো কেটে গাছের গোড়াগুলো মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। পরে কাটা গাছগুলো গিয়ে পাওয়া যায় কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে।
জেলা বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে জেলা বনবিভাগের উদ্যোগে কেন্দুয়া পৌরসভার কেন্দুয়া-মদন সড়কে গাছগুলো লাগানো হয়।
সড়কের গাছ কাটতে হলে দাম নির্ণয় করে টেন্ডার দিয়ে নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাটতে হয়।
নাম প্রকাশ না করে এলাকার কয়েকজন জানায়, কোন টেন্ডার ছাড়াই প্রশাসনের উপর অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি নেতা রফিক হিলালী গাছগুলো কেটে ফেলেছেন।
সরকারি গাছ এভাবে কেটে নেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু প্রভাব কাটিয়ে কাউকে না জানিয়ে তিনি গাছগুলো কেটে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমি চেষ্টা করছি বাড়ির সামনের ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো কাটতে। আমার ভাই আমিন হেলালী’র আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন গাছ গুলো কেটেছে বলে শুনেছি।
জেলা বন কর্মকর্তা গোলাম মস্তুফা সাংবাদিকদের বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা নাই। উপজেলা বনকর্মকর্তার সাথে কথা বলে পরে জানাবো বিষয়টি।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৯ আগস্ট আমিন হেলালী নামের এক ব্যক্তি তিনটি গাছ কাটার আবেদন করেছিলেন।
পরে গত সোমবার গাছগুলো কাটা হয়। নির্বাহী ক্ষমতা বলে যেকোন সময় যেকোন সরকারি গাছ ইউএনও কাটতে পারেন। পরে গাছগুলো টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিলামে বিক্রি করলেই হয়।
গাছগুলো আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুমতি চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির উত্তর পেলে কাটা গাছগুলো নিলাম ডাকের ব্যবস্থা করা হবে।