বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সিএজিই ইন্টারন্যাশনালের ৬ দাবি

আপডেট: August 29, 2024 |

শেখ হাসিনার ‘নিপীড়ক সরকারকে’ সফলভাবে উৎখাত করায় বাংলাদেশের ‘সাহসী জনগণকে’ শুভেচ্ছা জানিয়েছে সিএজিই ইন্টারন্যাশনাল।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক অধিকার সংগঠনটি এক বিবৃতিতে বলেছে, “শেখ হাসিনার নৃশংস কৌশলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে এবং তার সন্ত্রাসের রাজত্বের অবসান ঘটাতে দৃঢ় অঙ্গীকারের জন্য আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রশংসা করছি।

তার শাসনামলে মৃত্যুদণ্ড, নির্যাতন, জোরপূর্বক গুম এবং শিক্ষিত ও রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তারের কারণে বাংলাদেশ একটি অন্ধকার সময় পার করে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ও ভারতের সমর্থনপুষ্ট এই স্বৈরশাসকের পতন বাংলাদেশের জনগণের সহনশীলতা ও সাহসিকতার প্রমাণ।

বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ও পদ্ধতিগত সংস্কারের যাত্রা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, যতোক্ষণ না হাসিনার শাসনকে টিকিয়ে রাখা কাঠামোগুলোর ব্যাপক সংস্কার হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলনে অব্যাহত থাকতে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিবৃতিতে ৬টি দাবি তুলে ধরেছে সিএজিই ইন্টারন্যাশনাল-

১. গুমের শিকারদের মুক্তিতে অগ্রাধিকার: গুমের মামলাগুলো সুরাহা করতে ছাত্র আন্দোলনকে আবশ্যই নতুন সরকারের কাছে দাবি তুলে ধরতে হবে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের অবস্থান শনাক্ত করে মুক্তি দিতে হবে, তাদের মামলার সম্পূর্ণ বিবরণ প্রকাশের পাশাপাশি তাদের ও পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা দেওয়া জরুরি।

২. নির্বিচারে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তি: যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং তাদের মামলা খারিজ করতে হবে। নিপীড়নের শিকার হওয়ার কারণে তারা ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য।

৩. বিচার বিভাগীয় ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা: বেআইনি গ্রেপ্তারের আদেশ ও নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায়ের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক বিচারক ও পুলিশ কর্মকর্তার বিচার করতে হবে। যারা এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বা সহযোগিতা করেছে, তাদের সবার জবাবদিহি করতে হবে।

নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও গুমে ব্যবহৃত কেন্দ্র ও স্থান চিহ্নিত এবং শনাক্ত করতে ছাত্র আন্দোলনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিএইজিই বলছে, কী ঘটেছিল, কারা জড়িত ছিল এবং বিদেশি সম্পৃক্তার বিষয়ে এসব অবস্থানে তথ্য ও প্রমাণ থাকবে; যা নিপীড়িতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ রাখবে।

৪. থমকে থাকা বিচারিক মামলা: বিচার ব্যবস্থায় অন্যায়ভাবে যেসব মামলা আটকে রাখা হয়েছে, সেগুলোর পর্যালোচনা ও খারিজের জন্য একটি কমিশন গঠন করতে হবে। অন্যায়ের শিকার ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৫. আইনি সংস্কার: ক্ষমতার অপব্যবহার যাতে আর না হয়, সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই নিপীড়নমূলক আইন, বিশেষ করে ৬৪ অনুচ্ছেদ বাতিল করতে হবে। সব নাগরিকের সুরক্ষায় আইনের শাসন নিরপেক্ষভাবে প্রয়োগ করতে হবে।

৬. নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার: যেসব ইসলামি ও রাজনৈতিক সংগঠনকে অন্যায়ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেসব আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে- যাতে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সব গোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।

সিএইজিই ইন্টারন্যাশনাল বলছে, শান্তি ও ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশ এখন গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। সুষ্ঠু ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজের জন্য বাংলাদেশের জনগণের লড়াইয়ে সংহতি প্রকাশ করছে সিএজিই।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর