দেশে কোটা আন্দোলন ঘিরে ৩২ শিশু নিহত: ইউনিসেফ

আপডেট: August 3, 2024 |

বাংলাদেশে শিশুদের মৃত্যুতে উদ্বেগ জানিয়ে জাতিসংঘের শিশু ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক সঞ্জয় উইজেসেকেরা বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংসতায় অন্তত ৩২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২ আগস্ট) এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানান তিনি। বিবৃতিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে নিহত শিশুর পরিবারের সদস্যদের প্রতি শোক ও সমবেদনাও জানানো হয়।

সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই মাসে আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় অন্তত ৩২ শিশু নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে ইউনিসেফ। আরও অনেক শিশু আহত ও আটক হয়েছে। ইউনিসেফ সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানায়।

শিশুদের সুরক্ষা সব সময় নিশ্চিত করতে হবে, এটি সবার দায়িত্ব জানিয়ে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া প্রধান বলেছেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও শিশু অধিকার সনদ অনুসারে বাংলাদেশে শিশুদের আটক করার সব ঘটনার অবসান করতে হবে।

কোনো শিশু যদি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংঘাতে পড়ে, তবে তা তাদের জন্য অত্যন্ত ভীতিকর হতে পারে। সরকার, ইউনিসেফের অংশীদার ও সংস্থাগুলো এবং তরুণদের সঙ্গে বৈঠকে আমি জাতিসংঘের শিশুর অধিকার সনদের ওপর গুরুত্বারোপ করেছি।

এতে শিশুদের স্বাধীনভাবে সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ মত প্রকাশের অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

সহিংসতার প্রভাব থেকে শিশুদের বের করে আনা এবং তাদের নিরাপদে রাখতে স্কুলগুলো খুলে দেয়া, পড়াশোনা পুনরায় চালু এবং বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের আবার মিলিত হওয়ার সুযোগ তৈরি করা সবচেয়ে ভালো উপায়গুলোর অন্যতম বলে উল্লেখ করেন উইজেসেকেরা।

তিনি আরও বলেন, প্রাক্‌-প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৩ কোটি শিক্ষার্থী ১০ দিন স্কুলে যেতে পারেনি। চলতি বছরের শুরুতে তাপপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কারণে শিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছিল, তার সঙ্গে নতুন করে স্কুল বন্ধ হওয়ার ক্ষতি যুক্ত হয়েছে।

ইউনিসেফের এই কর্মকর্তা বলেন, ৪ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইউনিসেফ।

তবে তখনো প্রায় ১ কোটি ৫৫ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা শুরু করতে পারবে না। যত দীর্ঘ সময় শিশুরা, বিশেষ করে কন্যাশিশুরা স্কুলের বাইরে থাকবে, ততই তাদের পড়াশোনায় ফেরার সম্ভাবনা কমবে। এতে তাদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়বে।

বাংলাদেশ সরকার, ইউনিসেফের অংশীদার এবং তরুণদের জন্য কাজ করছে, এমন সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানান সঞ্জয় উইজেসেকেরা।

এসব বৈঠকে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে শিশুদের একত্র হওয়া ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকারের স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টির ওপর জোর দেন তিনি।

উইজেসেকেরা বলেন, শিশু ও তরুণেরা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তারা যখন কোনো কিছু নিয়ে সোচ্চার হন, তখন তাদের সুরক্ষা দেয়া উচিত।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর