জনস্বাস্থ্যের ইব্রাহিমকে ঘুষ দিতে গিয়ে মেয়ের কাপড়ও কিনতে পারি নাই!
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এর দফতরে জমা পরেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান সহকারী ইব্রাহিম খলিলের নিয়োগ বানিজ্যের বিশাল অভিযোগ।
অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, ঘুষ দিতে গিয়ে মেয়ের কাপর কিনতে পারেননি এক বাবা। এ ছাড়াও বিপদগ্রস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জিম্মি করে ঘুষ গ্রহণ ও মামলায় বিজয়ী কর্মচারীদের কাছ থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অর্থ গ্রহণসহ ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন প্রসঙ্গে একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে।সেখানে তিনি বিভিন্ন স্থানে খলিলের কিছু অবৈধ টাকায় কেনা সম্পত্তির পরিমান তুলে ধরেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর অভিযোগ করছেন আমজাদ আলী নামে এক ব্যক্তি। সেখানে তিনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান সহকারী ইব্রাহিম খলিলের নিয়োগ বানিজ্যেসহ নানান অভিযোগ এনে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান সহকারী ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে শাস্তি চেয়েছেন ভোক্তভোগী এই মোঃ আমজাদ আলী।
অভিযোগ পত্রে তিনি লেখেন, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় সূর্য নারায়নপুর গ্রামের মোঃ ছইবুর রহমানের পুত্র ইব্রাহীম খলিল। কারিগরিতে এসএসসি পাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যুক্ত হন স্বাধীনতা বিরোধী শিবিরের রাজনীতিতে। অভাব অনাটনের পরিবারে দিনমজুর বাবার পাশে দাড়াতে ২০০১ সালে চাকুরী নেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ডানিডা প্রকল্পে। শুরু হলো দুদ্রান্ত খলিলের দূনীতি।পটুয়াখালী হতে ঢাকায় বদলী নেন। চাকুরী বিধি লংঘন করে ভূল/মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরাসরি প্রধান সহকারী (পদোন্নতি পদ) পদে রাজস্ব বাজেটে নিয়োগ নেন। এক ভোক্তভোগী কর্মচারী জানান ঢাকায় বদলী হয়ে সিড়ির নিচে সাবলেটে পরিবার নিয়ে বসবাস করা খলিল মাসিক বেতন ৩০২৩০.০০ টাকা হতে আজ ৫ কোটি টাকার মালিক। গাজীপুর বোর্ড বাজারে রয়েছে ১০ কাঠার প্লট, বেউতা কেরানীগঞ্জ এ রয়েছে ৬.৬৭ কাঠার প্লট, আফতাব নগরে রয়েছে ফ্লাট, ভুলতায় গাউছিয়া নারায়নগঞ্জে আছে ৫ কাঠার প্লট। চতুর খলিল প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে পোষ্টিং নিয়ে হয়ে উঠেন বেপরোয়া। তার বেপরোয়া দেখে প্রাক্তন প্রধান প্রকৌশলী শিবির খলিল হিসেবে ডাকত। বিভিন্ন মানুষের নামে বেনামি পত্র লিখে পরবতীর্তে উক্ত পত্র তদন্তের মাধ্যমে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাক হাতিয়ে নেন।
অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়,বিগত কয়েক বছর ধরে মাষ্টাররোল কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় জনপ্রতি খলিলকে দিতে হয় ৫—১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। ভোক্তভোগিদের মধ্যে একজন জসিম উদ্দিন জানান মামলার রায় পাওয়ার পর আমার যখন চাকুরী নেই চেষ্ঠা চলছে তখন ঈদের সময় চাকুরীর জন্য নিরুপায় হয়ে খলিলকে ঘুষ দিতে গিয়ে মেয়ের কাপড়ও কিনতে পারি নাই। আর একজন মেকানিক ও ক্যাশিয়ার জানান চাকুরীর ধারাবাহিকতা এনে দিবে বলে খলিল ২,৫০,০০০.০০ টাকা নেন কিন্তু চাকুরীর ধারাবাহিকতা না হলেও টাকা ফেরত দেননি ঘুষখোর খলিল।আর এসব অপকর্মের কারণে তাকে তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী বদলী করলেও একজন নির্বাহী প্রকৌশলীর পুষ্টপোষকতায় কাজ করার নির্দেশে থেকে যান প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে আইন শাখায়।
প্রাক্তন প্রধান প্রকৌশলীর ঘুষের টাকা ভবন থেকে বাহিরে পাঠানোর কাজে নিয়োজিত ছিলেন খলিল। অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কাজ করার ক্ষেত্রে ভুলক্রটি হলে তাদের নামে কোন অভিযোগ আসলে খলিলের কপাল খুলে যায়। বানিয়ে বুনিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য করা ভাষায় অভিযোগের পত্র লিখেন যাতে করে তার কাছে ভুক্তভোগী বাচাঁর জন্য টাকার বান্ডিল নিয়ে ঘুড়াঘুড়ি করেন (বিভিন্ন সংবাদপত্রে তা প্রকাশিত হয়)। টাকা পাওয়ার পর তাকে নিশ্চিত করেন কোন কিছু হবে না চেষ্ঠা করব নরমান চিঠি দিয়ে লঘুদন্ড দেওয়ার জন্য।এমন কর্মকর্তারাও বিপদে পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে তার হাত থেকে রেহাই পায়। আর যারা যোগাযোগ করে না তার কপালে সুনিশ্চিত সাময়িক বরখাস্ত তারপর বরখাস্ত। এমন ঘটনা ৬৪ জেলায় তদন্ত করলে সাপ খুড়তে কেচু বের হবে বলে ভুক্তভোগিরা জানান। দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মচারীরা বছরের পর বছর ঘুরে মামলায় রায় পেয়ে পড়ে খলিলের জিম্মায়। একটা মামলা থেকে মাথাপিছু ১০—২০ হাজার টাকা করে ৫০ জন হলে ৫—১০ লক্ষ টাকা না দিলে মামলার কাগজপত্র ভুল করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন। নিরুপায় হয়ে টাকা দিতে বাধ্য হন। বিএনপি—জামায়াত পন্থী কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় শিবির নেতা খলিল একই দপ্তরে প্রায় ১৫ বছর যাবত আছেন এবং এ সমস্ত কাজ দীর্ঘদিন যাবত করে যাচ্ছেন।
এ অভিযোগ পত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান সহকারী ইব্রাহিম খলিল বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা অভিযোগ। আমি আর কিছুই বলতে চাই না।