বগুড়ায় নারী চিকিৎসকের আত্মহত্যা
শাহজাহান আলী, বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ বগুড়া সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের কর্মরত রুমনা শারমিন রুম্পা নামে এক নারী চিকিৎসক মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যা করেছেন।
বৃহস্পতিবার(২০ জুন) রাত সাড়ে ১০ টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডা.রুম্পা মারা যান।
চিকিৎসক রুমানা শারমিন রুম্পা বগুড়া সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের সার্জরী বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা.শফিক আমিন কাজল।
এর আগে,গত ১৯ জুন বুধবার রাতে বগুড়া শহরের বৃন্দাবনপাড়ার নিজ বাড়িতে বিপুল সংখ্যক ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করে ডা. রুম্পা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পরে তাঁকে বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতসলে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টায় ডা. রুম্পা সেখানে মারা যান। স্হানীয়রা জানান, বৃন্দাবনপাড়ার ” জমিদার ভিলা” নামক বাসাটি ডা.রুম্পার পৈত্রিক নিবাস।
তাঁর বাবা প্রয়াত আব্দুল কাইয়ুম খলিফা জমিদার পরিবারের সন্তান।ডা.রুম্পা তাঁর বাবার বাড়িতেই চিকিৎসক স্বামী বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (বায়ো-ক্যামিস্টি) ডা. সাজেদুল ইসলাম সুজন,বৃদ্ধ মা রওশন আরা বেগম ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে থাকতেন।
ডা. রুম্পার আত্মহত্যার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মন্তব্য জানানো হয়নি।নিহত ডা.রুম্পার বৃদ্ধ মা রওশন আরা বেগম ছাড়া বাড়িতে অন্য কেউ নেই। ডা.রুম্পার স্বামী চিকিৎসক সুজন ঢাকায় লাশের সঙ্গে অবস্থান করছেন।
ডা.রুম্পার চাচাতো ভাই নিশান খলিফার বরাত দিয়ে ডা.শফিক আমিন কাজল জানান, চিকিৎসক রুম্পার একমাত্র মেয়ের লেখাপড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনাটির সূত্রপাত হয়।
ডা.রুম্পা তাঁর মেয়েকে শাসন করায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। সেই অভিমানে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করেন রুম্পা।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের ডা. কাজল বলেন, চিকিৎসক হিসেবে ডা.রুম্পা অনেক ভালো ছিলেন। হাসপাতসলের কর্মরত- কর্মচারিদের তিনি খুবই প্রিয় চিকিৎসক।
তাঁর মানসিক দৃঢ়তাও যথেষ্ট ছিলো। তিনি হঠাৎ এমনটি করবেন তা কেউ বিশ্বাসই করতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা থেকে লাশ সরাসরি বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নেওয়া হবে। সেখানে শুক্রবার বাদ এশা জানাযার নামাজ শেষে লাশ বাড়িতে নেওয়া হবে।
পরদিন শনিবার সকালে বৃন্দাবনপাড়া ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় জানাযা নামাজ শেষে পারিবারিক করবস্হানে লাশ দাফন করা হবে।
বগুড়া সদর থানায় অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।
সেখানকার চিঠি পেয়েই মৃত্যুর বিষয়টি সদর থানা পুলিশ অআগত হয়।ঘটনাটি জানার পর তাঁরা আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করছেন বলেও জানান তিনি।