সিংগাইরে পুলিশ ক্যাম্প এলাকায় আইন-শৃংখলার অবনতি

আপডেট: December 9, 2023 |

সোহরাব হোসেন, সিংগাইর প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার অন্তর্গত ধল্লা পুলিশ ক্যাম্প এলাকায় আইন-শৃংখলার চরম অবনতি ঘটেছে।

চুরি,ডাকাতি ও খুনের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে। হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা মাস পেরিয়ে গেলেও রহস্য উদঘাটন হচ্ছে না ।

ক্যাম্প পুলিশের উদাসীনতায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, গত ৩ অক্টোবর নিখোঁজ হন দক্ষিণ ধল্লা গ্রামের অটোচালক সুলতান মির্জা (৭০)। পরদিন পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় করা হয় জিডি।

জিডির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ওই ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলামকে। জিডির এক মাস পর ৪ নভেম্বর ক্যাম্পের অদূরে ধলেশ্বরী নদী থেকে উদ্ধার করা হয় সুলতান মির্জার কঙ্কাল।

পরিবারের লোকজন কঙ্কালের পড়নের কাপড় দেখে লাশ সনাক্ত করেন। পরদিন নিহত সুলতান মির্জার ছেলে নেসার উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এক মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ ওই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। নিহত পরিবাররের অভিযোগ, থানায় জিডি করার পর তদন্ত কর্মকর্তার কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

তেমনি হত্যার রহস্য উদঘাটনেও এসআই রফিকুলের একই রকম আচরণ কষ্টকর । হত্যা মামলার বাদী নেসার উদ্দিন জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার প্রতি আস্থা হারিয়ে ১৫-২০ দিন আগে সিআইডিতে হস্তান্তর করার জন্য আবেদন করেছি ।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, এর আগে সাথী নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয় ক্যাম্প এলাকার নদীর পাড় থেকে।

সে হত্যা মামলাটির এসআই রফিকুল ইসলাম রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৯ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩ টার দিকে গাজিন্দা গ্রামের (হঠাৎ পাড়া) প্রবাসী জুয়েলের বাড়িতে ডাকাতিকালে ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলামকে স্থানীয় বাসিন্দারা একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

অবশ্য অল্প সময়ের মধ্যে ডাকাতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো‘র নেতৃত্বে ডাকাত দলের সকল সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ৬ নভেম্বর দিন-দুপুরে ধল্লা বাজার সংলগ্ন বাড়ি থেকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়ার মোটর সাইকেল চুরি হয়।

তিনি অভিযোগ করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চেয়ারম্যানের অভিযোগটি জিডি কিংবা মামলা হিসেবেও নথিভুক্ত করা হয়নি।

গত ৩ নভেম্বর ধল্লা গ্রামের আনোয়ার হোসেন প্রিন্সের বাড়ি থেকে দিন-দুপরে মোটর চুরির ঘটনা ঘটে।

তার আগের দিন আনোয়ারের প্রতিবেশী ওয়াদুদ ও ফোর্ডনগর গ্রামের কালাম মোল্লার বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে।

গত ১১ অক্টোবর নয়াপাড়া গ্রামে রাত ১ টার দিকে ৩ ঘন্টা ব্যাপী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ৩টি বসতবাড়ি ভাংচুর করে।

এ সময় বাহার ও তার ছেলে আরিফুলকে কুপিয়ে জখম করা হয় । মাধররের শিকার হন বেশ কয়েকজন।

খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে এসআই রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধ না করে রহস্যজনক কারণে সেখান থেকে ফিরে আসেন।

ধল্লা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির মালামাল উদ্ধারসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সুলতান মির্জা হত্যা মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ক্যাম্প এলাকায় সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে দাবি করেন তিনি ।

এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো বলেন, আমরা আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি ।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর